জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আগের রাতে অন্য দিনের চেয়ে একটু আগেই বাসায় গেলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সাধারণত প্রতিদিন যে সময়ে কার্যালয়ে আসেন, বুধবার সংবাদ সম্মেলন করায় সে নিয়মে ব্যত্যয় ঘটলো। রাত ৯টার সময়েই বাসভবন ফিরোজার দিকে রওনা হন তিনি। আর ফেরার সময়ও কার্যালয়ে অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু আলাদা দৃশ্যই তৈরি হলো। নিচতলার সিঁড়ির কাছ থেকেই সিনিয়র নেতারা তাকে সালাম দিয়ে বিদায় দেন। ব্যতিক্রম ছিল জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বেবী নাজনীনের ক্ষেত্রে। খালেদা জিয়া কার্যালয় ত্যাগের সময় গাড়ির পিছু-পিছু হেঁটে গেট পর্যন্ত এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
কার্যালয় ত্যাগের পর রাত ৯টা ৫ মিনিটে বাসভবনে প্রবেশ করেন খালেদা জিয়া। তাকে বিদায় জানিয়ে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ম্যাডামের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা ভালো এবং শক্ত। কাল সকালে তিনি আদালতে যাবেন।’ এর আগে বুধবার বিকালে পৌনে ৬টার দিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে দোতলায় খালেদা জিয়া তার নির্ধারিত কক্ষে বসেন। এরপর সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে দলের করণীয় ও কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
রাত ৯টার পাঁচ মিনিট আগে বাসার উদ্দেশে কার্যালয় ত্যাগ করেন বিএনপির চেয়ারপারসন। অন্যান্য দিনের মতো নেতারা বিদায় জানালেও বুধবার ছিল কিছুটা ব্যতিক্রম। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ূম, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্সসহ অন্যরা তাকে বিদায় জানান। খালেদা জিয়াও গাড়িতে বসে উপস্থিতদের উদ্দেশে সালাম দেন। পরে তার গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার সময় পিছু-পিছু বেবী নাজনীনসহ অন্য নারীনেত্রীরা দ্রুত পায়ে এগিয়ে যান। খালেদা জিয়ার গাড়ি কার্যালয় ত্যাগ করার পরপরই গুলশান এলাকা ছাড়তে তড়িঘড়ি নিজ-নিজ গাড়িতে উঠে পড়েন বিএনপির নেতারা। একে একে বেরিয়ে পড়েন স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল একবার কার্যালয় থেকে বের হলেও রাত ৮টার দিকে ফিরে আসেন। পরে রাত ৯টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি উত্তরার বাসার উদ্দেশে রওনা হন। গাড়িতে উঠার সময় নতুন একটি মোবাইল ফোনের প্যাকেট দেখা গেছে তার হাতে।
রাত সাড়ে ৯টার পর আবারও খালেদা জিয়ার বাসভবনে এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে তৎপরতা দেখা গেছে, সেটিও খানিকটা কম ছিল। গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে থেকেও সরে গেছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। তবে গুলশান-১ মোড়, গুলশান-২ মোড়ে রাত পৌনে ১০টার দিকেও অতিরিক্ত পুলিশের টহল চোখে পড়ে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আদালতের দিকে রওনা হতে পারেন।
Leave a Reply